বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
পবিত্রতা (ওযূ ও তায়াম্মুম)
(২০) ওযুর পর অঙ্গ মুছতে নিষেধ করা :
ওযু করার পর রমাল, গামছা কিংবা কাপড় দ্বারা অঙ্গ মুছতে পারে। এটা ইচ্ছাধীন। যে বর্ণনায় অঙ্গ মুছতে নিষেধ করা হয়েছে, তা জাল বা মিথ্যা।
আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.), আবুবকর, ওমর, আলী এবং ইবনু মাসউদ (রাঃ) ওযুর পর রমাল দিয়ে মুখ মুছতেন না।
তাহক্বীকৃ :
বর্ণনাটি
জাল। এর সনদে সাঈদ বিন মাইসারা নামে একজন রাবী রয়েছে। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদসহ
অন্যান্য মুহাদ্দিছও তাকে মিথুক বলেছেন।
ইবনু হিব্বান তাকে জাল হাদীছের গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন। ইমাম বুখারী তাকে মুনকার বলেছেন। উল্লেখ, উক্ত মর্মে যঈফ হাদীছও আছে।
(২১) হাত ধোয়ার সময় কনুই-এর উপরে আরো বেশী করে বাড়িয়ে ধৌত করা :
হাত ধৌত করতে হবে কুনই পযন্ত। এর বেশি নয়।আল্লাহর নির্দেশ এটাই (সূরা মায়েদাহ ৬)। হাদীছের শেষে ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করার যে বক্তব্য এসেছে, তার উদ্দেশ্য অঙ্গ বাড়িয়ে ধৌত করা নয়; বরং ভালভাবে ওযু সম্পাদন করা।
১৪৭. সিলসিলা যঈফাহ হা/৭৪৪, ২/১৬৭ পৃঃ।।
১৪৮. আল-মাছনু ফী মা'রেফাতিল হাদীছিল মাওযূ', পৃঃ ৭৩, দ্রঃ সিলসিলা যঈফাহ
| ১/১৬৯ পৃঃ। ।
১৪৯. সিলসিলা যঈফাহ ১/১৬৯ পৃঃ।।
১৫০. বায়হাক্বী, সনদ হাসান, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২০৯৯; ইবনু মাজাহ হা/৪৬৮;
আওনুল মাবুদ ১/৪১৭-১৮ পৃঃ।।
১৫১. ইবনু শাহীন, নাসিখুল হাদীছ ওয়া মানসূখাহু, পৃঃ ১৪৫, দ্রঃ যাকারিয়া বিন গুলামা | কাদের পাকিস্রনী, তানকীহুল কালাম ফিল আহাদীছি যঈফাহ ফী মাসাইলিল
আহকাম (বৈরত : দার= ইবনে হাযম, ১৯৯৯/১৪২০), পৃঃ ৯৬।
১৫২. আওনুল মা'বুদ ১/২৮৭ পৃঃ; নায়লুল আওত্বার ১/২২০ পৃঃ; নাসিখুল হাদীছ ওয়া মানসূখাহু, পৃঃ ১৪৫
১৫৩. আলবানী, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৫২ নং-এর ভাষ্য দ্রঃ, উলেণ্ডখ্য, উক্ত অংশটুকু সংযােজনের ক্ষেত্রে এটি সাব্যল্ড হয়েছে বলেও মুহাদ্দিছগণ উলেণ্টখ করেছেন। দ্রষ্টব্য আহমাদ হা/৮৩৯৪; ইবনু হাজার আসক্বালানী, ফাতহুল বারী হা/১৩৬-এর আলােচনা, ওযূর ফযীলত’ অনুচ্ছেদ; ইরওয়াউল গালীল ১/১৩৩ পৃঃ ।
(২২) চামড়ার মোজা ছাড়া মাসাহ করা যাবে না বলে ধারণা করা :
উক্ত ধারণা সঠিক নয়। বরং যেকোন পবিত্র মোজার উপর মাসাহ করা যাবে। হাদীছে কোন নির্দিষ্ট মোজার শর্তারোপ করা হয়নি।
(২৩) মোজার উপরে ও নীচে মাসাহ করা :
অনেককে
মোজার উপরে-নীচে উভয় দিকে মাসাহ করতে দেখা যায়। অথচ সুন্নাত হল মোজার উপরে মাসাহ
করা।
উপরে-নীচে উভয় দিকে মাসাহ করা সংক্রান্ত যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তার সনদ যঈফ
এবং ছহীহ হাদীছের বিরোধী। যেমন
মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) বলেন, আমি তাবুক যুদ্ধে রাসূল (ছাঃ)-কে ওযূ করিয়েছি। তিনি দুই মোজার উপরে এবং নীচে মাসাহ করেছেন।
তাহক্বীকৃ :
হাদীছটি
যঈফ। ইমাম তিরমিযী বলেন,
“এই হাদীছটি ত্রুটিপূর্ণ।
আমি ইমাম আবু যুর'আহ ও ইমাম বুখারীকে এই
হাদীছ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, এই হাদীছ ছহীহ নয়।
ইমাম আবুদাউদও একে দুর্বল বলেছেন। এই হাদীছের সনদে ছাওর নামক একজন রাবী রয়েছে। ইমাম আবুদাঊদ বলেন, সে রাজা ইবনু হাইওয়া থেকে না শুনেই বর্ণনা করেছে।
জ্ঞাতব্য :
বর্তমানে
অনেকেই মোজা পরিহিত অবস্থায় টাখনুর নীচে লুঙ্গিপ্যান্ট পরিধান করাকে জায়েয বলছেন
ও পরিধান করছেন।
এটা শরীআতকে ছোট করার মিথ্যা কৌশল মাত্র। পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির সাথে আপোষ করে তারা রাসূল (ছাঃ)-এর আদর্শকে নস্যাৎ করতে চায়। এই মিথ্যা কৌশল থেকে সাবধান থাকতে হবে।
১৫৪. ছহীহ আবুদাউদ হা/১৫৯, ১/২১ পৃঃ; ছহীহ তিরমিযী হা/৯৯; সনদ ছহীহ, মিশকাত
হা/৫২৩, পৃঃ ৫৩; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৮৮, ২/১৩২ পৃঃ।
১৫৫. আলােচনা দ্রঃ ইবনু তায়মিয়াহ, মাজমূউ ফাতাওয়া ১/২৬২ পৃঃ; আলবানী, আছ
ছামারল মুত্বাব, পৃঃ ১৪-১৫।
১৫৬. ছহীহ বুখারী হা/১৮২, ১/৩০ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৮২, ১/১১৫ পৃঃ); মুসলিম হা/৬৪৯;
ছহীহ আবুদাউদ হা/১৬১ ও ১৬২, ১/২২ পৃঃ; তিরমিযী হা/৯৮, ১/২৮-২৯ পৃঃ। ১৫৭. আবুদাউদ হা/১৬৫, ১/২২ পৃঃ; তিরমিযী হা/৯৭, ১/২৮ পৃঃ; ইবনু মাজাহ হা/৫৫০, পৃঃ
৪২; মিশকাত হা/৫২১, পৃঃ ৫৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৮৬, ২/১৩১ পৃঃ।।
১৫৮. -যঈফ তিরমিযী হা/৯৭, ১/২৮ পৃঃ)।
১৫৯. যঈফ আবুদাউদ হা/১৬৫, ১/২২ পৃঃ।।
(২৪) ওযূর পর আকাশের দিকে তাকিয়ে দুআ পড়া :
ওযুর দুআ পড়ার সময় আকাশের দিকে তাকানোর প্রয়োজন নেই। উক্ত মর্মে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা যঈফ।
উকবা বিন আমের (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ভালভাবে ওযূ করল, অতঃপর আকাশের দিকে চোখ তুলে দু'আ পড়ল, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে। যেকোন দরজা দিয়ে সে প্রবেশ করতে পারবে।
তাহক্বীকৃ :
বর্ণনাটি মুনকার। আকাশের দিকে তাকানো অংশটুকু ছহীহ হাদীছের বিরোধী। তাই শায়খ আলবানী (রহঃ) বলেন, “এই অতিরিক্ত অংশটুকু অস্বীকৃত। কারণ ইবনু আম আবী উকৃাইল এককভাবে বর্ণনা করেছে। সে অপরিচিত।
১৬০. আহমাদ হা/১২১; মু খাব হাদীস, পৃঃ ২৯৩।
পাঠকের সুবিধাথে অল্প কিছু লেখা দিয়েছি। তাতে আপনাদের পড়তে সুবিধা হবে।
চলবে...........
إرسال تعليق