বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

সালাতের ফযীলত

 

সালাতের ফযীলত সংক্রান্ত উদ্ভট ও মিথ্যা কাহিনী সমূহ :

মানুষকে সালাতের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্যফাযায়েলে আমলের মধ্যে এমন কিছু তথ্য ও কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, আজগুবি ও অবাস্তব।

 


নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হল :

(১) যে ব্যক্তি ফরয সালাত সমূহের যথাযথ হেফাযত করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে পাঁচ দিক থেকে সম্মানিত করবেন।

যেমন-

(ক) সংসারের অভাব-অনটন দূর করবেন

(খ) কবরের আযাব মাফ করবেন

(গ) বিচারের দিন ডান হাতে আমলনামা দিবেন

(ঘ) পুলছিরাতের উপর দিয়ে দ্রুত গতিতে পার হয়ে যাবে

(ঙ) বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। পক্ষারে যে ব্যক্তি সালাতের ব্যাপারে অলসতা করবে তাকে পনের প্রকারের শাস্তি প্রদান করা হবে। তার মধ্যে পৃথিবীতে পাঁচ প্রকার, মৃত্যুর সময় তিন প্রকার, তিন প্রকার কবরে, কবর হতে উঠার পর তিন প্রকার।

 

পৃথিবীতে পাঁচ প্রকার হল-

(ক) তার জীবনে কোন কল্যাণ আসে না

(খ) তার চেহারা হতে জ্যোতি

(গ) তার সৎ আমলের কোন প্রতিদান দেওয়া হয় না

(ঘ) তার দুআ কবুল হয় না

(ঙ) সৎ ব্যক্তিদের দুআর মাঝে তার কোন অংশ থাকে না।


মৃত্যুর সময়ের তিন প্রকার শাস্তি হল-

(ক) সে লাঞ্ছনার সাথে মৃত্যুবরণ করে

(খ) ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে

(গ) এমন তৃষ্ণার্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করে যেসমুদ্র পরিমাণ পানি পান করলেও তার পিপাসা দূর হবে না।

 

কবরে তিন প্রকার শাস্তি হল-

(ক) তার জন্য কবর এমন সংকীর্ণ হবে যেতার বুকের একদিকের হাড় অপরদিকে ঢুকে যাবে

(খ) কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে

(গ) এমন একটি সাপ তার কবরে রাখা হবে যার চক্ষুগুলো আগুনের এবং নখগুলো লােহার। সাপটি এত বড় যেএকদিনের পথ চলার পর শেষ পযন্ত পৌছা যাবে। 

এর হুংকার বজ্রের মত। সাপটি বলবেআমার প্রভু তোমার জন্য আমাকে নির্ধারণ করেছেনযেন ফজরের সালাত ত্যাগ করার কারণে সূর্যোদয় পযন্ত তোমাকে দংশন করতে পারি

যহোরের সালাত না পড়ার কারণে যেন আছর পযন্ত  এবং আছরের সালাত না পড়ার কারণে সূর্যাস্তু পযন্ত দংশন করতে পারি। 

অনুরূপ মাগরিবের সালাত না পড়ার কারণে এশা পর্য এবং এশার সালাত নষ্ট করার কারণে সকাল  পযন্ত দংশন করতে পারি। 

এই সাপ একবার দংশন করলে সত্তর হাত মাটির নীচে মুর্দা ঢুকে যাবে। এভাবে কিয়ামত পর্যড় তার শাস্তি হতে থাকবে।

 

কবর হতে উঠার পর তাকে তিন প্রকারের শাস্তি দেওয়া হবে।

(ক) কঠিনভাবে তার হিসাব নেওয়া হবে

(খ) আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত থাকবেন।

(গ) তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

পনের নম্বরটি পাওয়া যায় না। তবে অন্য বর্ণনায় রয়েছে,

তার মুখমলে তিনটি লাইন লেখা থাকবে :

(ক) আল্লাহর হক বিনষ্টকারী

(খ) ওহে আল্লাহর অভিশাপে অভিশপ্ত

(গ) দুনিয়াতে যেমন আল্লাহর হক বিনষ্ট করেছ তেমনি আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়েছে'


পর্যালোচনা :

পুরো বর্ণনাটি মিথ্যা ও বাতিল। কারণ এর কোন সনদ নেইবর্ণনাকারীও নেই। ফাযায়েলে আমলের মধ্যেই বর্ণনাটির পর্যালোচনায় এক জায়গায় বলা হয়েছেএই হাদীছ মিথ্যা

(২) জামাআতের সাথে এক ওয়াক্ত সালাত আদায় করলে তিন কোটি পঁয়ত্রিশ লক্ষ চুয়ান্ন হাযার চারশ বত্রিশ গুণ নেকী হবে।

 

পর্যালোচনা :

হাদীছে বলা হয়েছে যেজামাআতে সালাত আদায় করলে একাকী পড়ার চেয়ে ২৫ গুণ বা ২৭ গুণ বেশী ছওয়াব পাওয়া যাবে। অন্য হাদীছে রয়েছেপঁচিশটি সালাতের নেকী হবে।উক্ত দুই হাদীছের ফযীলতের উদ্ভট ব্যাখ্যা দিয়ে কোটি কোটি বৃদ্ধি করা হয়েছেযা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।


৩২২. বায়হাক্বী হা/১১০৫৩; ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ৮৭।।

৩২৩. সিলসিলা যঈফাহ হা/৩২১৬।

৩২৪. ইবনু মাজাহ হা/২৬৯৮, পৃঃ ১৯৩, ‘অছিয়ত অধ্যায়; আবুদাউদ হা/৫১৫৬, ২/৭০১ পৃঃ।

৩২৫. ফাযায়েলে আমল, ফাযায়েলে নামায অংশ (উর্দু), পৃঃ ৩১-৩৩; (বাংলা), পৃঃ | ১০৪-১০৬; ইবনু হাজার হায়ছামী, আল-যাওয়াজির আন ইকৃতিরাফিল কাবাইর,

(বৈরূত : ১৯৯৯), পৃঃ ২৬৪।

৩২৬. আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ, ৪১/১১৬।

৩২৭. ফাযায়েলে আমল, (উর্দু) পৃঃ ৩৪; বাংলা, পৃঃ ১০৬।

৩২৮. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১২৫; (উর্দু), ফাযায়েলে নামায অংশ, পৃঃ ৪৫।

৩২৯. ছহীহ বুখারী হা/৪৭৭, (ইফাবা হা/৪৬৩, ১/২৫৯ পৃঃ), ‘ছালাত' অধ্যায়, বাজারের

| মসজিদে ছালাত' অনুচ্ছে এবং হা/৬৪৫, ‘আযান, অধ্যায়, ‘জামা'আতে ছালাতের ফযীলতঅনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১০৫২, পৃঃ ৯৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৯৮৫,

৩/৪৪ পৃঃ।।

৩৩০. আবুদাউদ হা/৫৬০, ১/৮৩ পৃঃ।

 

(৩) সাঈদ ইবনু মুসাইয়িব (রহঃ) পঞ্চাশ বছর পযন্ত এশা ও ফজরের সালাত একই ওষু দ্বারা পড়েছেন।

(৪) চলিৎশ জন তাবেঈ সম্পর্কে অসংখ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, তারা এশা ও ফজর একই ওযূতে পড়তেন।

(৫) ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) ত্রিশ বছর কিংবা চলিশ বছর কিংবা পঞ্চাশ বছর এশা ও ফজর সালাত একই ওযুতে পড়েছেন। 

তাঁর সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে, ওযূর পানি ঝরার সময় তিনি বুঝতে পারতেন এর সাথে কোন্ পাপ ঝরে যাচ্ছে।

 

৩৩১. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬০; (উর্দু), পৃঃ ৬৮। যার

৩৩২. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬০, (উর্দু), পৃঃ ৬৮।

৩৩৩. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬০, (উর্দু), পৃঃ ৬৮।

৩৩৪. ফাযায়েলে আমল (বাংলা), পৃঃ ৭৮।

 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া)-এর অধীন ফাযিল স্নাতক প্রথম বর্ষের আলআকৃাঈদ বইয়ে আবু হানীফা (রহঃ)-এর গুণাবলী সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি একাধারে ৩০ বছর রোযা রেখেছেন এবং ৪০ বছর যাবত রাতে ঘুমাননি। 

ইবাদত বন্দিগীতে রজনী কাটায়ে গিয়েছেন। প্রতি রামাযানে ৬১ বার কুরআন মাজীদ খতম করতেন। অনেক সময় এক রাকয়াতেই কুরআন মাজীদ এক খতম দিতেন। 

তিনি ৫৫ বার হজ্জ করেছেন। জীবনের শেষ হজ্জের সময় কাবা শরীফে দুরাকয়াত নামায এভাবে পড়েন যে, প্রথম রাকয়াতে এক পা ওঠায়ে প্রথম অর্ধাংশ কুরআন মাজীদ পাঠ করেন। 

তারপর দ্বিতীয় রাকয়াতে অপর পা ওঠায়ে বাকি অর্ধাংশ কুরআন মাজীদ পাঠ করেন। যে স্থানে তার ইঙ্কিাল হয়েছে, সেখানে এক হাজার বার কুরআন মাজীদ খতম করেছেন। তিনি ৯৯ বার আল্লাহ তা'য়ালাকে স্বপ্নে দেখেছেন।

 

(৬) ইমাম শাফেঈ (রহঃ) রামাযান মাসে সালাতের মধ্যে পবিত্র কুরআন ৬০ বার খতম করতেন।

(৭) ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) দৈনিক ৩০০ রাক'আত সালাত আদায় করতেন। ৮০ বছর বয়সে তিনি দৈনিক ১৫০ রাকআত সালাত আদায় করতেন।

(৮) সাঈদ ইবনু যুবাইর (রহঃ) এক রাক'আতে পুরা কুরআন খতম করতেন।

(৯) আবু আত্তার সুলামী (রহঃ) চলিশ বছর পর্যড় সারা রাত ক্রন্দন করে কাটাতেন এবং দিনে সর্বদা ছিয়াম পালন করতেন।

(১০) বাকী ইবনু মুখালণ্ডাদ (রহঃ) দৈনিক তাহাজ্জুদ ও বিতর সালাতের তের রাকআতে কুরআন খতম করতেন।

(১১) মুহাম্মাদ ইবনু সালামা ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মাদ (রহঃ)-এর ছাত্র ছিলেন। তিনি ১০৩ বছর বয়সে মারা যান। 

ঐ বয়সে তিনি প্রতিদিন ২০০ রাকআত করে সালাত আদায় করতেন। দীর্ঘ চলিশ বছর তার একটানা তাকবীরে তাহরীমা ছুটেনি। 

মায়ের মৃত্যুর কারণে মাত্র একবার ছুটে গিয়েছিল। জামাআতে না পড়ার জন্য তিনি ঐ সালাত ২৫ বার পড়েন।

 

৩৩৫. রচনা ও সম্পাদনা : মাওলানা মুহাম্মদ আবু ইউসুফ খান, আল-আকাইদ আল

ইসলামিয়্যাহ (ঢাকা : আল-বারাকা লাইব্রেরী, ৩৪, নর্থক হল রােড,

বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০), পৃঃ ৪৫।

৩৩৬. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬১, (উর্দু), পৃঃ ৬৮।

৩৩৭. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬১, ১৫৮, (উর্দু), পৃঃ ৬৬ ও ৬৮।

৩৩৮. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৫৮, (উর্দু), পৃঃ ৬৬।

৩৩৯, ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬১, (উর্দু), পৃঃ ৬৮।

৩৪০. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৬০, (উর্দু), পৃঃ ৬৭।

 

(১২) ওমর ইবনু আব্দুল আযীয (রহঃ) সারা রাত্রি ইবাদতে মশগুল থাকতেন। এমনকি খেলাফতের দায়িত্ব পাওয়ার পর তার ফরয গোসলের প্রয়োজন হয়নি।

(১৩) জনৈক বুযুর্গ ব্যক্তির পায়ে ফোঁড়া হয়েছিল। ডাক্তারগণ পরামর্শ দিলেন, পা না কাটা হলে জীবনের হুমকি রয়েছে। 

তখন তার মা বললেন, যখন সালাতে দাঁড়াবে  তখন কেটে নিতে হবে। অতঃপর তিনি যখন সালাতে দাঁড়ালেন তখন তারা তার পা কেটে ফেললে তিনি মােটেও টের পেলেন না।

পায়ে তীর বিদ্ধ হয়েছিল। সেই তীর বের করা যাচ্ছিল না। অবশেষে তিনি ছালাতে দাঁড়ালে তার পা থেকে তীর বের করা হলঅথচ তিনি টের পেলেন না। এই কাহিনীও মিথ্যা।

 

৩৪১. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১২৫-১২৬, (উর্দু), পৃঃ ৪৬।

৩৪২. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৫৭, (উর্দু), পৃঃ ৬৫-৬৬।

৩৪৩. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৫৬, (উর্দু), পৃঃ ৬৫।

 


 

পর্যালোচনা :

সুধী পাঠক! উক্ত কাহিনীগুলো মুসলিম বিশ্বের বরেণ্য মনীষীদের সম্পর্কে উলেখ করা হয়েছে। প্রশ্ন হল, তারা কি আদৌ এভাবে তাদের ইবাদতী জীবন অতিবাহিত করেছেন? তাদের দ্বারা কি এ ধরনের বাড়াবাড়ি সম্ভব? যেমন-

 

(ক) দীর্ঘ ৪০/৫০ বছর যাবৎ এশার সালাতের ওযু দ্বারা ফজরের সালাত আদায় করা। বছরের পর বছর একটানা ছিয়াম পালন করা ইত্যাদি। 

মানবীয় কারণ উলেখ না করে যদি প্রশ্ন করা হয়- শরীআতে এভাবে সারা রাত ধরে ইবাদত করার অনুমােদন আছে কি? রাসূল (সা.) ও তার ছাহাবীদের পক্ষ থেকে এরূপ কি কোন নবীর আছে

আল্লাহ তাআলা রাসূল (সা.)-কে রাত্রের কিছু অংশ বাদ দিয়ে ইবাদত করতে বলেছেন (মুয্যাম্মিল ২-৪)। রাসূল (সা.) ছাহাবী আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনু আছ (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেন, ‘তুমি ছিয়াম পালন কর আবার ছিয়াম ছেড়ে দাও, তুমি রাত্রে ইবাদত কর আবার ঘুমাও। 

কারণ তোমার  উপর তোমার শরীরের হক আছে, তোমার উপর তোমার দুই চোখের হক আছে, অনুরূপ তোমার উপর তোমার স্ত্রীর হক আছে।

রাসূল (সা.) অন্য হাদীছে বলেন, “যে ব্যক্তি সর্বদা ছিয়াম পালন করে তার ছিয়ামের কোন মূল্য নেই। একথা তিনি দুইবার কিংবা তিনবার বলেন।

 

(খ) প্রতিদিন ৩০০, ২৫০ কিংবা ২০০ রাকআত সালাত আদায় করা। রাসূল (সা.) ও ছাহাবায়ে কেরাম এ ধরনের কোন ইবাদত করেছেন মর্মে প্রমাণ নেই। 

জানা আবশ্যক যে, রাসূল (সা.)-এর তরীকা ব্যতীত যেকোন ইবাদত প্রত্যাখ্যাত। বরং শরীআতের বিধিবদ্ধ নিয়মকে অবজ্ঞা করে যে বেশী বেশী ইবাদত করবে নিঃসন্দেহে সে মুহাম্মাদ (সা.)-এর উম্মত থেকে বহিষ্কৃত হবে। 

কারণ রাসূল (সা.) ইবাদতের কথা জেনে তিন ব্যক্তি খুব কম মনে করেছিল এবং তারা বেশী বেশী ইবাদত করতে চেয়েছিল। এদের ব্যাপারে রাসূল (সা.) বলে দিলেন, যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল, সে আমার অদ্ভুক্ত নয়।

 

৩৪৪. ছহীহ বুখারী হা/৫১৯৯, ২/৭৮৩ পৃঃ, (ইফাবা হা/৪৮২৪, ৮/৪৭৪ পৃঃ), ‘বিবাহ

অধ্যায়, অনুচ্ছেদ ৮৮; মিশকাত হা/২০৫৪, পৃঃ ১৭৯; বঙ্গানুবাদ মিশকাত | হা/১৯৫৬, ৪/২৫৩ পৃঃ, ছিয়ামঅধ্যায়, নফল ছিয়ামঅনুচ্ছেদ।

৩৪৫. ছহীহ বুখারী হা/১৯৭৭, ১/২৬৫ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৮৫৩, ৩/২৭৭ পৃঃ), “ছিয়াম

অধ্যায়, ‘ছিয়ামের ক্ষেত্রে পরিবারের হকঅনুচ্ছেদ-৫৬- 

৩৪৬. ছহীহ মুসলিম হা/৪৫৯০, ২/৭৭, (ইফাবা হা/৪৩৪৪), ‘বিচারঅধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮।

 

(গ) সালাতে কুরআন খতম করা। এক রাক'আতে পুরো কুরআন খতম করা এবং রামাযান মাসে শুধু তারাবীহর সালাতে ৬০ বার খতম করা। 

এ হিসাবে প্রত্যেক রাতে দুইবার করে খতম করতে হয়েছে। এটা সম্ভব কি-না তা যাচাই করবেন পাঠকবৃন্দ। 


তবে স্বয়ং রাসূল (সা.)ও এভাবে কুরআন তেলাওয়াত করে রাতের সালাত আদায় করেননি। 

তিনি একবার এক রাকআতে সর্বোচ্চ সূরা বাক্বারাহ, নিসা ও আলে ইমরান পড়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। জনৈক ছাহাবী সাত দিনের কমে কুরআন খতম করতে চাইলে রাসূল (সা.) তাকে অনুমতি দেননি। 


তিনি তিন দিনের কমে কুরআন খতম করতে নিষেধ করেছেন। তাছাড়া আয়েশা (রাঃ) বলেন,

রাসূল (সা.) কোন এক রাত্রিতে পুরো কুরআন খতম করেছেন, কোন রাত্রে পুরো রাত সালাত আদায় করেছেন এবং রামাযান মাস ছাড়া অন্য কোন মাসে সম্পূর্ণ মাস ছিয়াম পালন করেছেন মর্মে আমি জানি না। 


এই নিয়মতান্ত্রিক নির্ধারিত ইবাদত করার মাধ্যমেই তিনি হয়েছেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ তাক্বওয়াশীল।


প্রশ্ন হল- যে সমস্তু মহা মনীষী সম্পর্কে উক্ত অলীক কাহিনী রচনা করা হয়েছে, তারা কি শরীআতের এই বিধানগুলো জানতেন না


তারা কি রাসূল (সা.) ও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত ছাহাবীদের চেয়ে বেশী পরহেযগার হতে চেয়েছিলেন? (নাউযুবিল্লাহ)। 


বিশেষ করে ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) সম্পর্কে যে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে তা আসলেই দুঃখজনক। 


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের অদ্ভুক্ত বইয়ে কিভাবে তা সম্পৃক্ত হতে পারে? বলা যায় তাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী মহল এ সমস্তু অলীক কাহিনী আবিষ্কার করেছে।

 

৩৪৭. ছহীহ বুখারী হা/৫০৬৩, ২/৭৫৭ পৃঃ, (ইফাবা হা/৪৬৯৭, ৮/৩৮১ পৃঃ), ‘বিবাহ

অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; ছহীহ মুসলিম হা/৩৪৬৯, ‘বিবাহঅধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১ এবং হা/২৫০০; মিশকাত হা/১৪৫, পৃঃ ২৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৩৭, ১/১০৯ পৃঃ –

৩৪৮. ছহীহ মুসলিম হা/১৮৫০, ১/২৬৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৬৮৪), ‘মুসাফিরদের ছালাত

| অধ্যায়, রাত্রির ছালাতে কিরাআত লম্বা করা মুহাবঅনুচ্ছেদ-২৭।

৩৪৯, ইবনু মাজাহ হা/১৩৪৬, পৃঃ ৯৫ ও ৯৬, ‘ছালাত অধ্যায়, ‘কয় দিনে কুরআন খতম

করা ভালঅনুচ্ছেদ-১৭৮।

৩৫০. তিরমিযী হা/২৯৪৯, ২/১২৩ পৃঃ, ‘কিরাআত' অধ্যায়ের শেষ হাদীছ; ইবনু মাজাহ | হা/১৩৪৭; মিশকাত হা/২২০১, পৃঃ ১৯১, ‘ফাযায়েলুল কুরআন অধ্যায়, ‘কুরআন।

পাঠের আদবঅনুচ্ছেদ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২০৯৭, ৫/৩৬ পৃঃ।।

৩৫১. ছহীহ মুসলিম হা/১৭৭৩, ১/২৫৬ পৃঃ, (ইফাবা হা/১৬০৯), ‘মুসাফিরদের ছালাত’ | অধ্যায়, রাত্রির ছালাত ও যে ছালাত না পড়ে ঘুমে যায়অনুচ্ছেদ-১৮; মিশকাত

হা/১৫২৭, পৃঃ ১১১, ‘বিতরঅনুচ্ছেদ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১১১৮, ৩/১৩১ পৃঃ।

৩৫২. ছহীহ বুখারী হা/৫০৬৩, ২/৭৫৭ পৃঃ, (ইফাবা হা/৪৬৯৭, ৮/৩৮১ পৃঃ), “বিবাহ

অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১; মিশকাত হা/১৪৫, পৃঃ ২৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৩৭, ১/১০৯ পৃঃ।।

 

(১৪) ছাবেত আল-বুনানী (রহঃ)আল্লাহর সামনে অধিক ক্রন্দন করতেন আর বলতেন, হে আল্লাহ কবরে যদি কাউকে সালাত আদায় করার অনুমতি দান করে থাকেন, তাহলে আমাকে অনুমতি দিন। 

আবু সিনান বলেন, আল্লাহর কসম! ছাবেতকে যারা দাফন করেছেন তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। দাফনের সময় কবরের একটি ইট পড়ে গেল। 

আমি দেখতে পেলাম তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছেন। তার কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, আব্বা ৫০ বছর যাবৎ রাত্রি জাগরণ করেছেন এবং উক্ত দু'আ করেছেন।

 

(১৫) একজন স্ত্রীলোককে দাফন করা হল । তার ভাই দাফনের কাজে শরীক ছিল। এ সময় তার টাকার থলি কবরের মাঝে পড়ে যায়। 

পরে বুঝতে পেরে চুপে চুপে কবর খুলে বের করার চেষ্টা করে। যখন সে কবর খুলল তখন কবরটি আগুনে পরিপূর্ণ ছিল। 

সে কাঁদতে কাঁদতে মায়ের নিকট আসল এবং ঘটনা বর্ণনা করল। তখন তার মা উত্তরে বলল, সে সালাতে অলসতা করত এবং সালাত ক্বাযা করত।

 

পর্যালোচনা :  

কবর জীবন মানুষের দুনিয়া ও আখেরাতের মধ্যবর্তী জীবন। এই জীবন মানুষের বা জীবনের বিপরীত। 

দুনিয়ার কোন মানুষ বারযাখী জীবন সম্পর্কে খবর রাখে না। কবরের শাস্তি কোনকিছু কেউ টের পায় না। সেখানকার অবস্থা দেখা তো দূরের কথা, মানুষ ও জিনের পক্ষে কানে শুনাও সম্ভব নয়।

 

(১৬) শায়খ আব্দুল ওয়াহিদ (রহঃ) ছিলেন বিখ্যাত বুযুর্গের একজন। তিনি বলেন, আমার একবার খুব ঘুমের চাপ হল। 

ফলে রাত্রের নিয়মিত তাসবীহগুলো পড়তে ছুটে গেল। তখন স্বপ্নে আমি সবুজ রেশমী পােশাক পরিহিতা 

এক অপূর্ব সুন্দরী যুবতীকে দেখলাম। তার পায়ের জুতাগুলো পযন্ত তাসবীহ পাঠ করছে। সে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলছে, তুমি আমাকে পাওয়ার চেষ্টা কর, আমি তোমাকে পাওয়ার চেষ্টা করছি। 

অতঃপর সে কয়েকটি প্রেমমূলক কবিতা পাঠ করল। এই স্বপ্ন দেখে আমি প্রতিজ্ঞা করলাম, রাত্রে আর কখনাে ঘুমাব না। অতঃপর তিনি দীর্ঘ চলিশ বছর পর্য এশার ওযু দিয়ে ফজরের সালাত আদায় করেন।

 

(১৭) জনৈক বুযুর্গ বলেন, এক রাত্রিতে গভীর ঘুমের কারণে আমি জেগে থাকতে পারলাম না। ঘুমিয়ে পড়লাম। 

স্বপ্নে এক অপূর্ব সুন্দরী মেয়েকে দেখলাম। এমন মেয়ে আমি কখনাে জীবনে দেখিনি। তার দেহ থেকে তীব্র সুগন্ধি ছড়াচ্ছে। এমন সুগন্ধি আমি কখনাে অনুভব করিনি। 

সে আমাকে একটি কাগজের টুকরা দিল। তাতে কবিতার তিনটি চরণ লেখা ছিল। যেমনতুমি দ্রিার স্বাদে বিভাের হয়ে জান্নাতের বালাখানা সমূহ ভুলে গেছ, যেখানে তোমাকে চির জীবন থাকতে হবে, যেখানে কখনাে মৃত্যু আসবে না। 

তুমি ঘুম হতে উঠ, কুরআন তেলাওয়াত কর, তাহাজ্জুদ সালাতে কুরআন তেলাওয়াত করা ঘুম হতে অনেক উত্তম। তিনি বলেন, এই ঘটনার পর হতে আমার কখনাে ঘুম আসে না। কবিতাগুলো স্মরণ হয় আর ঘুম দূরিভূত হয়ে যায়।

 

পর্যালোচনা :  

কী চমৎকার রােমাঞ্চকর উপন্যাস! সুন্দরী মেয়ের প্রলােভন দেখিয়ে মানুষকে আল্লাহর পথে নিয়ে আসার কী সুন্দর অভিনব কৌশল!

আল্লাহর ভয় ও ইসলামী বিধানের আনুগত্যের কোনই প্রয়োজন নেই। শুধু সুন্দরী নর্তকীকে পাওয়ার জন্য সে ইবাদত করবে। এটা কি কোন ইসলামী সভ্যতা?

 

সুধী পাঠক! ফাযায়েলে আমলে এ ধরনের অসংখ্য মিথ্যা কাহিনী রয়েছে। এই মিথ্যা ফযীলতের ধোকা দিয়ে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে প্রতারণার জালে আবদ্ধ করা হচ্ছে।

যে সমস্তু ভাইয়েরা ফাযায়েলে আমল পড়েন ও আমল করেন তারা কি একটিবার চিন্তা করবেন

আমরা সরলপ্রাণ মুমিন ভাইদেরকে উক্ত মরণ ফাঁদ থেকে বের হয়ে প্রমাণসহ ছহীহ দলীলের অনুসরণ করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। 

আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে উক্ত মিথ্যা ও কাল্পনিক ধর্ম থেকে রক্ষা করন-আমীন!!

 

৩৫৩. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৫৯, (উর্দু), পৃঃ ৬৭।

৩৫৪. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১১৮।

৩৫৫. ছহীহ বুখারী হা/১৩৩৮, (ইফাবা হা/১২৫৭, ২/৪০২ পৃঃ), ‘জানাযা অধ্যায়,

অনুচ্ছেদ-৬৬ ও ১৩৭৪; মিশকাত হা/১২৬ ও ১৩১।

৩৫৬. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৫২, (উর্দু), পৃঃ ৬২।

৩৫৭. ফাযায়েলে আমল, পৃঃ ১৫৩, (উর্দু), পৃঃ ৬৩।

 

পাঠকের সুবিধাথে অল্প কিছু লেখা দিয়েছি। তাতে আপনাদের পড়তে সুবিধা হবে।


চলবে...........

 


Post a Comment

Previous Post Next Post

সূরা ফাতিহা

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন সালাত আদায় করল অথচ সূরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার সালাত অসম্পূর্ণ রয়ে গেল।

এ কথাটি তিনি তিনবার বলেন। তখন আবু হুরায়রাকে জিজ্ঞেস করা হল, আমরা যখন ইমামের পিছনে থাকি? উত্তরে তিনি বললেন, তুমি চুপে চুপে পড়।

কেননা আমি রাসূল (সা.) -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমি সালাতকে আমার মাঝে ও আমার বান্দার মাঝে দুই ভাগে ভাগ করেছি।

আমার বান্দার জন্য সেই অংশ যা সে চাইবে। বান্দা যখন বলে, ‘আল-হামদুলিল্লা-হি রাবিবল ‘আলামীন’ (যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎ সমূহের প্রতিপালক)। তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল। বান্দা যখন বলে, ‘আর-রহমা-নির রহীম’ (যিনি করুণাময়, পরম দয়ালু)।

তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। বান্দা যখন বলে, ‘মা-লিকি ইয়াওমিদ্দ্বীন’ (যিনি বিচার দিবসের মালিক) তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমাকে সম্মান প্রদর্শন করল। বান্দা যখন বলে, ইয়্যা-কানা‘বুদু ওয়া ইয়্যা-কানাসতাঈন (আমরা কেবল আপনারই ইবাদত করি এবং আপনার নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করি)।

তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ (অর্থাৎ ইবাদত আমার জন্য আর প্রার্থনা বান্দার জন্য) এবং আমার বান্দার জন্য সেই অংশ রয়েছে, যা সে চাইবে।

যখন বান্দা বলে, ‘ইহদিনাছ ছিরাত্বাল মুস্তাক্বীম, ছিরা-ত্বল্লাযীনা আন‘আমতা ‘আলায়হিম, গয়রিল মাগযূবি ‘আলায়হিম ওয়ালায য-ল্লীন (আপনি আমাদের সরল পথ প্রদর্শন করুন।

তাদের পথ যাদের উপর আপনি রহম করেছেন। তাদের পথ নয় যারা অভিশপ্ত এবং পথভ্রষ্ট)। তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যা চেয়েছে তা তার জন্য’। (আমীন)।

দশটি সূরা এবং তার উচ্চারণ ও অনুবাদ

() সূরা নাস


قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ النَّاسِ () مَلِكِ النَّاسِ () إِلهِ النَّاسِ () مِنْ شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ () اَلَّذِيْ يُوَسْوِسُ فِي صُدُوْرِ النَّاسِ ()مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ ()

উচ্চারণ:- ক্বুল আঊযু বিরব্বিন্না-স। মালিকিন্না-স। ইলা-হিন্না-স। মিন্শার্রিল অসওয়া-সিল খান্না-স। আল্লাযী ইউওয়াসবিসু ফী সুদূরিন্না-স। মিনাল জিন্নাতি অন্না-

অর্থ:- তুমি বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি, মানুষের প্রতিপালক, মানুষের অধীশ্বর, মানুষের উপাস্যের কাছে- তার কুমন্ত্রণার অনিষ্ট হতে, যে সুযোগমত আসে (কুমন্ত্রণা দিয়ে) সরে পড়ে। যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের হৃদয়ে, জিন মানুষের মধ্য হতে

() সূরা ফালাক্ব


قُلْ أَعُوْذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ () مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ () وَمِنْ شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ () وَمِنْ شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ () وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَاحَسَدَ ()

উচ্চারণ:- ক্বুল আঊযু বিরব্বিল ফালাক্ব। মিন শার্রি মা খালাক্ব। অমিন শার্রি গা-সিক্বিন ইযা অক্বাব। অমিন শার্রিন্নাফ্ফা-ষা-তি ফিল উক্বাদ। অমিন শার্রিহা-সিদিন ইযাহাসাদ

অর্থ:- তুমি বল, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার প্রভুর নিকট। তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট হতে। এবং রাতের অনিষ্ট হতে যখন তা গভীর অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়। এবং গ্রন্থিতে ফুত্কারিণী (যাদুকরী)দের অনিষ্ট হতে। এবং হিংসুকের অনিষ্ট হতে যখন সে হিংসা করে

() সূরা ইখলাস


قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ () اَللهُ الصَّمَدُ () لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ () وَلَمْ يَكُنْ لَّهُ كُفُواً أَحَدٌ ()

উচ্চারণ:- ক্বুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লা-হুস সামাদ। লাম য়্যালিদ, অলাম ইউলাদ। অলাম য়্যাকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ

অর্থ:- বল, তিনি আল্লাহ একক। আল্লাহ ভরসাস্থল। তিনি জনক নন এবং জাতকও নন। আর তাঁর সমকক্ষ কেউই নেই

() সূরা লাহাব


تَبَّتْ يَدَا أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ () مَا أَغْنى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ () سَيَصْلى نَاراً ذَاتَ لَهَبٍ () وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ () فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ ()

উচ্চারণ:- তাব্বাৎ য়্যাদা আবী লাহাবিঁউঅতাব্ব মা আগনা আনহু মা-লুহু অমা কাসাব। সায়্যাস্বলা না-রান যা-তা লাহাব। অমরাআতুহুহাম্মা-লাতালহাত্বাব। ফী জীদিহাহাবলুম মিম মাসাদ

অর্থ:- ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দুইহাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ উপর্জিত বস্তু তার কোন উপকারে আসবে না। সে প্রবেশ করবে লেলিহান শিখাবিশিষ্ট অগ্নিকুন্ডে। আর তার স্ত্রীও -যে কাঠের বোঝা বহনকারিণী। ওর গলদেশে খেজুর চোকার রশি হবে

() সূরা নাস্বর


إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ () وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُوْنَ فِيْ دِيْنِ اللهِ أَفْوَاجاً () فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُإِنَّهُ كَانَ تَوَّاباً ()

উচ্চারণ:- ইযা জা- নাস্বরুল্লা-হি অল ফাতহ। অরাআইতান্না-সা ইয়্যাদখুলুনা ফী দীনিল্লা-হি আফওয়াজা। ফাসাব্বিহ্বিহামদি রাব্বিকা অস্তাগফিরহু; ইন্নাহু কা-না তাউওয়া-বা

অর্থ:- যখন আসবে আল্লাহর সাহায্য বিজয়। তুমি দেখবে মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে। তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা কর এবং তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল

() সূরা কা-ফিরুন


قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُوْنَ () لاَ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ () وَلاَ أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ () وَلاَ أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدْتُّمْ () وَلاَ أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ () لَكُمْ دِيْنُكُمْ وَلِيَ دِيْنِ ()

উচ্চারণ:- ক্বুল ইয়া আই য়ুহাল কা-ফিরুন। লা- বুদু মা- তাবুদূন। অলা- আন্তুম ’-বিদূনা মা- বুদ। অলা- আনা ’-বিদুম মা বাত্তুম। অলা- আন্তুম ’-বিদূনা মা- বুদ। লাকুম দীনুকুম অলিয়া দীন

অর্থ:- বল, হে কাফের দল! আমি তার উপাসনা করি না, যার উপাসনা তোমরা কর। তোমরাও তাঁর উপাসক নও, যাঁর উপাসনা আমি করি। আমি তার উপাসক হ্ না, যার উপাসনা তোমরা কর। আর তোমরাও তাঁর উপাসক নও, যাঁর উপাসনা আমি করি। তোমাদের ধর্ম তোমাদের এবং আমার ধর্ম আমার (কাছে প্রিয়)

() সূরা কাউষার


إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ () فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ () إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الأَبْتَرُ ()

উচ্চারণ:- ইন্না- ত্বাইনা-কাল কাউষার। ফাস্বাল্লি লিরব্বিকা অন্হার। ইন্না- শা-নিআকা হুওয়াল আবতার

অর্থ:- নিঃসন্দেহে আমি তোমাকে কাউসার (হাওয) দান করেছি। সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামায পড় এবং কুরবানী কর। নিশ্চয় তোমার শত্রুই হল নির্বংশ

() সূরা ক্বুরাইশ


لإِيْلاَفِ قُرَيْشٍ () إِيْلاَفِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ () فَلْيَعْبُدُوْا رَبَّ هذَا الْبَيْتِ () اَلَّذِيْ أَطْعَمَهُمْ مِنْجُوْعٍ وَّآمَنَهُمْ مِّنْ خَوْفٍ ()

উচ্চারণ:- লিঈলা-ফি ক্বুরাইশ্ঈলা-ফিহিম রিহ্লাতাশ শিতা- অস্স্বাইফ্ফাল য়্যাবুদু রব্বাহা-যাল বাইত্ আল্লাযী আত্বআমাহুম মিন জু অআ-মানাহুম মিন খাঊফ

অর্থ:- যেহেতু কুরাইশের জন্য শীত গ্রীষ্মের সফরকে তাদের স্বভাব সুলভ করা হয়েছে, সেহেতু ওরা উপাসনা করুক এই গৃহের রক্ষকের। যিনি ক্ষুধায় ওদেরকে আহার দিয়েছেন এবং ভীতি হতে নিরাপদ করেছেন

() সূরা ফীল


أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيْلِ () أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِيْ تَضْلِيْلٍ () وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْراً أَبَابِيْلَ () تَرْمِيْهِمْ بِحِجَارَةٍ مِّنْ سِجِّيْلٍ () فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُوْلٍ ()

উচ্চারণ:- আলাম তারা কাইফা ফাআলা রব্বুকা বিআস্বহা-বিল ফীল। আলাম য়্যাজ্আল কাইদাহুম ফী তায্বলীল। অআরসালা আলাইহিম ত্বাইরান আবা-বিল। তারমীহিম বিহিজারাতিম মিন সিজ্জীল। ফাজাআলাহুম কাআস্বফিম মাকূল

অর্থ:- তুমি কি দেখ নি, তোমার প্রতিপালক হ্স্তীবাহিনীর সঙ্গে কি করেছিলেন? তিনি কি ওদের কৌশলকে ব্যর্থ করে দেন নি? তিনি তাদের উপর ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি প্রেরণ করেন। যারা ওদের উপর নিক্ষেপ করে কঙ্কর। অতঃপর তিনি ওদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন

(১০) সূরা আসর


وَالْعَصْرِ () إِنَّ الإِنْسَانَ لَفِيْ خُسْرٍ () إِلاَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ ()

উচ্চারণ:- অল আসর। ইন্নাল ইনসা-না লাফী খু সর। ইল্লাল্লাযীনা -মানূ অআমিলুস স্বা-লিহা-তি অতাওয়াস্বাউবিলহাক্বি অতাওয়াস্বাউবিসস্বাবর

অর্থ:- মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত। তবে তারা নয়, যারা ঈমান এনে সৎকর্ম করেছে এবং একে অপরকে সত্য ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে